Monday, May 14, 2018

কাঁথা, পাড়ের সুতো এবং মেয়েদের হাতে পয়সা নাথাকা

এরকম একটা তত্ত্ব বেশ কয়েক বছর ধরে ঘুরে বেড়ায় কাঁথা পুরোনো পাড়ে হত কারণ মহিলাদেরে হাতে সুতো কেনার অর্থ ছিল না। বহুদিন ধরে এই তত্ত্বটা দেখছি উত্তর দেওয়ার সুযোগ হয় নি। কাঁথার প্রদর্শনী সূত্রে ভাবনাতা জারিয়ে গেল। এক বন্ধু খোঁচালেনও।
একটু অন্যভাবে ভাবি?
আমাদের মত করে উত্তর দেওয়া গেল ।
এটা ইওরোপিয়দের নোংরা তত্ত্বায়ন।
কেন বললাম?
১) আমরা দেখিয়েছি আজ থেকে ১০০ বছর আগেও, বহু মহিলা বাড়িতে চরকায় সুতো কাটতেন। তার আগে ১৮০০ সাল নাগাদ যখন আদতে বাংলার কাঁথার সুবর্ণ যুগের শেষের দিকের সময়, তখন এত কাপড় উতপাদন হত বাংলায় প্রত্যেক বাড়িতে প্রায় প্রত্যেক মেয়েকে সুতো কাটতে হত, নাহলে ঐপরিমান তাঁত চলে না, কাপড়ও তৈরি হয় না, বাংলাও উদ্বৃত্ত অর্থনৈতিকভাবে অঞ্চল হয় না। সুতোকেটে যে তারা সংসার চালাতেন তার বড় উদাহরণ সংবাদ চন্দ্রিকায় ১৮২৮ সালের সুতা কাটনির চিঠি। ফলে তাদের হাতে সুতো ছিল না এই তথ্যটা ঠিক নয়।
২) প্রয়োজন ছিল একটু মোটা সুতো। তাই তারা পুরনো শাড়ির পাড় ব্যবহার করতেন। শুধু কাঁথা নয় আরেওও পরিবারের নানান কাজে।
৩) আর মানসিকভাবে এটা পুণর্নবীকরণের কাজ। বাড়ির কাজে যে কোন শ্রেণীর মহিলা তাইই করতেন - কিভাবে একটু হলেও সংরক্ষণ করা যায় প্রকৃতিকে। তাই মরা আঁচে মশলাগুলো টেলে নিতেন। রাতে কম উনুনে পিঠা করতেন, আলু, বেগুণ ইত্যাদি পোড়া বানাতেন - বড়ি আচার রোদে শুকিয়ে নিতেন। এরকম হাজারো উদাহরণ দেওয়া যায়। আমার মাকে দেখি গ্যাস চালালোর সময় বার্নারের নিচে কিনে আনা মশলা ধুয়ে শুকিয়ে নেন। রোদও ব্যবহার করেন। মিস্টির প্যাকেটকে ফালা ফালা করে ছিঁড়ে ছিঁড়ে উনুন ধরাবার কাজে ব্যবহার করেন। মহিলাদেরে এই চরিত্রটা ফুটে উঠেছে পাট থেকে নানান রঙের সুতো বের করে কাঁথায় ব্যবহার করায়।
ফলে প্রত্যেক ক্ষেত্রে ইওরোপিয়রা আব আমাদের ইওরোপমুখী বিদ্বানেরা কি বলছেন তা ভালভাবে যাচাই করে নেওয়া দরকার।

No comments: