Thursday, February 15, 2018

হান্টার এবং তৎকালীন বাংলার বাস্তবতা

সাম্রাজ্য তাত্ত্বিক হান্টার মশাই নাকি বাংলায় দুটি জিনিসের অভাব দেখেছিলেন,
১) বর্ণ জাতিগুলির মধ্যে সহযোগিতার অভাব,
২) প্রয়োজনাতিরিক্ত উৎপাদনে অনীহা।
প্রথমটা নিয়ে শুধু বলব – ১৮৩৬এর উইলিয়াম এডামের শিক্ষা সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে বাংলার ১ লক্ষ গাঁইয়া পাঠশালায় উচ্চ আর নিম্নবর্ণের সন্তানেরা পাশাপাশি বসে পাঠ নিচ্ছে, বরং পাঠশালায় উচ্চবর্ণের তুলনায় শূদ্র পড়ুয়ার সংখ্যা অনেক অনেক গুণ বেশি। 
এবারে দ্বিতীয় চলকটা।
ঠিকই বাংলার উৎপাদকেরা আজকের সর্বগ্রাসী কর্পোরেটদের মত বিদেশি বাজারের দিকে তাকিয়ে উৎপাদন কররেতেন না।অতিউৎপাদন না হওয়া সত্ত্বেও বাংলায় হান্টারদের পূর্বপুরুষ সহ গোটা বিশ্বকে মাল কিনতে পলাশী পূর্বের দেড়শ বছর ধরে সোনা রূপা আর দামি রত্ন বয়ে নিয়ে আনতে হচ্ছে। বাংলার কারিগরদের উৎপন্ন দ্রব্য একচেটিয়াভাবে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে যাচ্ছে।
বাংলার আর্থিক পশ্চাদপদতার পক্ষে যুক্তি দেখাতে গিয়ে ঔপনিবেশিক তাত্ত্বিক মশাই সমস্ত দায় চাপিয়ে দিয়েছেন উপনিবেশের প্রজাদের ঘাড়ে আর নিজেদের তৈরি লুঠেরা খুনি সাম্রাজ্যের লুঠের কথা লুকিয়েছেন ব্রিটিশ উন্নয়নের ঢক্কা নিনাদে। তাঁর তত্ত্ব নির্ভর করে পরবর্তী ঐতিহাসিক-সমাজতাত্ত্বিকেরা বাংলার সমাজ বিশ্লেষণ করেছেন।
সেই (ঔপনিবেশিক) ট্রাডিশন সমানে চলেছে।

No comments: